December 22, 2024, 9:20 am
মিথোস আমান, দৈনিক কুষ্টিয়া অনলাইন/
কুষ্টিয়ার বাজারে তরমুজ পাওয়া যাচ্ছে। দাম চড়া হলেও মানুষ কিনছে। কিন্তু তথ্য নিয়ে দেখা গেছে এসব তরমুজ বেশিরভাগঅর্থেই অপরিপক্ব। ভেতরে লাল রং ধারণ করলেও এখনও মিষ্টতা আসেনি পুরোপুরি। ফলে এসব অপরিপক্ব তরমুজ চড়া দামে কিনে প্রতারিত হচ্ছেন ক্রেতারা।
কৃষি কর্মকর্তারার সাফ বলছেন এসব তরমুজ অপরিপক্ক। এর থেকে প্রকৃত স্বাদ মিলবে না। পক্ষান্তরে বেশী দামে কিনে ক্রেতা সাধারণের ঠকে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় নেই।
কুষ্টিয়ার প্রধান বাজার পৌর বাজারে পরিদর্শন করে দেখা গেছে, তরমুজ এবারও কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে দাম হাঁকা হচ্ছে ৭০ থেকে ৯০ টাকা পর্যন্ত। একটি দুই বা তিন কেজির তরমুজের গড় দাম পড়ছে ২১০ টাকা থেকে ২৭০ টাকা পর্যন্ত। এসব তরমুজ কেটে দেখা যাচ্ছে ভিন্ন চিত্র ভেতরের কোষগুলো ফাঁপা, শুকনো। লাল রঙ কেবলই ধরেছে। কোনটি আবার সাদা-লাল। কিছু কিছু তরমুজের স্বাদ মিষ্টি হলেও, বেশির ভাগই পানসে স্বাদের। কোষের ভেতরে কোন রস নেই। অথচ লাল রসই তরমুজের প্রধান উপাদান। একটি তিন কেজি ওজনের পাকা তরমুজ থেকে কমপক্ষে এক থেকে দেড় লিটার পিউর রস পাওয়া যায়।
অভিজ্ঞতা জানালেন ক্রেতা মুক্তার হোসেন। তিনি জানান, তিনি তিন কেজি ওজনের একটি তরমুজ কিনে জানালেন এর মধ্যে এক পোয়া রসও মিলেনি।
জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, সাধারণত ডিসেম্বর মাসে তরমুজের আবাদ শুরু হয়। ফল উঠে এপ্রিলে। এরপর মে মাসজুড়ে মাঠে তরমুজ থাকে। সেই মাসই ভরা মৌসুম। পরিপক্ব তরমুজ উঠতে উঠতে চৈত্র মাস বা এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ হয়। কিন্তু চাষিরা দামের কারণে আগেভাগেই অপরিপক্ব তরমুজ তুলে বেশি লাভের আশায় বিক্রি শুরু করে দিয়েছে।
বাজারে ওঠা বেশির ভাগ তরমুজ অপরিপক্ব বলে স্বীকার করেছেন খোদ কৃষকরা।কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের চিলমারি চরের তরমুজ চাষি রশিদ আসকারী জানান, এখনও তরমুজ উঠতে সময় লাগগে ১৫ থেকে ২০ দিন। যেসব তরমুজ বাজারে এসেছে সেগুলো পাকা নয়। রমজানে যেহেতু তরমুজের চাহিদা থাকে, সেজন্য বাড়তি লাভের আশায় অনেকে বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে আরও কয়েক দিন পর যেসব তরমুজ আসবে, সেগুলো পরিপক্ব হবে।
ঐ কৃষক জানান, যখন প্রকৃত তরমুজ উঠবে তখন হয়তো আর দাম পাওয়া যাবে না।
জেলার বিভিন্ন স্থানে ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তারা কেজি দরে তরমুজ বিক্রি বন্ধের বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেন। অপিরপক্ক তরমুজ বিক্রয় করে ঠকানো হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। অনেক ক্রেতা বলছেন এবারও তরমুজ বিক্রিতে কেজি অনুসরণ করছে বিক্রেতারা। তারা পিস হিসেবে তরমুজ কিনতে চান তারা।
সম্মিলিত সামাজিক জোটের চেয়ারম্যান ড. আমানুর আমান প্রশ্ন তুলেন, বিক্রেতারা ঠকাচ্ছেন, তারা তো ঠকিয়েই থাকেন, কিন্তু সাধারণ মানুষই বা ঠকছেন কেন ? সব কিছুকেই প্রশাসন দেখবে তা কেন হবে। সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। না হলে তাদেরকে ঠকতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা বুঝতেই পারছি অপরিপক্ক তরমুজ, প্রতারনা করা হচ্ছে। বুঝেও কেন ঐসব ক্রয় করতে যাচ্ছি।
Leave a Reply